আফগানিস্তান সিরিজে ব্যর্থ লিটন তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তামিমের সঙ্গী কে?

দীর্ঘদিন পর দেশের বাইরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি এবং তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে আগামী ২৩ জুন ঢাকা ত্যাগ করবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

অ্যান্টিগো ২৮ এবং ২৯ জুন প্রস্তুতি ম্যাচে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ দল। এরপর ৪ থেকে 8 জুলাই এই মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ টেস্ট স্কোয়াড চূড়ান্ত করে ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দুই-একদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের চূড়ান্ত টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কেমন হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াড। দলে চমক হিসেবে দেখা যেতে পারে ব্যাটসম্যান নাজমুল হাসান শান্ত কে। সৌম্য সরকারের বাজে ফর্মের কারণে স্কোয়াডে জায়গা পেতে যাচ্ছেন এই তরুণ ওপেনার।

কাটার মাস্টারকে ছাড়াই ক্যারিবীয়দের সাথে প্রথম টেস্টের দল প্রায় চূড়ান্ত। এমন নয়, শেষ মুহূর্তে তার অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা আছে। সে সম্ভাবনাও শূন্যের কোঠায়। বলেই দেয়া যায়, বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজকে ছাড়াই ঘোষণা হতে যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াড।

তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আশায় আছেন, দ্বিতীয় টেস্টে মোস্তাফিজকে পেতে পারেন দলে। প্রসঙ্গতঃ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে এবারের আইপিএলের শেষ ম্যাচে ব্যাথা পাওয়া মোস্তাফিজ দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে থেকেও আগের রাতে পায়ের অগ্রভাগে ব্যাথার কারণে সরে যেতে বাধ্য হন।

এক্স-রেতে পায়ে সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে বাদ দিয়ে পেসার আবুল হাসান রাজুকে নেয়া হয়। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে মোস্তাফিজ খেলতে না পারলে অন্য কারো কপাল খুলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কামরুল ইসলাম রাব্বির দলে ঢোকার সম্ভাবনা খুব বেশি।

এদিকে মোস্তাফিজের পাশাপাশি আরেক আহত পেসার তাসকিন আহমেদও সম্ভবত প্রথম টেস্টের দলে থাকছেন না। তার ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরার সম্ভাবনাও খুব কম বলে জানা গেছে। আফগানদের সাথে ২০ ওভারের ক্রিকেটে যে দাগ লেগেছ, সেই ঘা শুকাতে সময় লাগবে; কিন্তু তার আগেই আরেক অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখি সাকিবের দল।

এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই টেস্টের কঠিন মিশন টাইগারদের। সব কিছু ঠিক থাকলে জুন মাসে ২২-২৩ তারিখে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে টাইগাররা।

আগামীকাল দুপুরের মধ্যে ১৫ জনের দল সাজিয়ে বোর্ডের জমা দেবেন নির্বাচকরা। সেই দলে কোন নতুন মুখ আছে কী? তা নিয়েও রাজ্যের জল্পনা-কল্পনা। এ প্রশ্নের সত্যিকার উত্তর মেলেনি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন প্রশ্নের সোজা সাপ্টা জবাব দেননি। তবে হাব-ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, একদম নতুন কারো দলভুক্তির সম্ভাবনা খুব কম।

তবে এক উদ্যমী তরুণের জায়গা পাওয়া মোটামুটি নিশ্চিত। তিনি নাজমুল হোসেন শান্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলা নাজমুল হোসেন শান্তর টপ অর্ডারে দলভুক্তি একরকম নিশ্চিত। আরেক তরুণ ওপেনার সাদমান ইসলামের কথাও শোনা যাচ্ছে।

তবে তাকে এখনই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কঠিন কন্ডিশনে টেস্ট অভিষেকের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ‘এ’ দলের হয়ে সুযোগ দেয়ার কথাই নাকি ভাবা হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে পরিপাটি ব্যাটিং শৈলির তরুণ সাদমানের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ডাক পাবার সম্ভাবনা খুব কম।

এদিকে পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টে যে দু’জন হতে পারতেন অধিনায়ক সাকিবের প্রধান অস্ত্র, সেই দ্রতগতির তাসকিন আর সুইং ও কাটার মাস্টার মোস্তফিজের বিকল্প খুঁজতে গিয়ে খানিক বিপাকে নির্বাচকরা। ১৫ জনের দলে পেসারের সংখ্যা কম থাকবে। সর্বোচ্চ চার পেসারকে দেখা যেতে পারে। রুবেল, কামরুল ইসলাম রাব্বি, শফিউল, আবু জায়েদ রাহি এবং আবু হায়দার রনির মধ্য থেকে যে কোন একজন হয়ত থাকবেন দলে।

এদিকে নানা কারণেই সাব্বির রহমান রুম্মনের দলে থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমনিতেই ফর্ম নেই। কোন ফরম্যাটেই রান পাচ্ছেন না। তারপর এবার দেরাদুন গিয়ে শেষ ম্যাচের আগে মিরাজের সাথে বাদানুবাদ ও শারীরিক সংঘর্ষে লিপ্ত হবার অভিযোগ আছে তার বিপক্ষে।

যে কারণে শেষ ম্যাচে দলের বাইরে রাখা হয় তাকে। একই অভিযোগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দলে জায়গা নাও পেতে পারেন সাব্বির। সে ক্ষেত্রে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান ঢুকে যেতে পারেন দলে। ওদিকে ক্রমাগত অফফর্মে থাকা সৌম্য সরকারও হয়ত বাদ পড়তে যাচ্ছেন।

সম্ভাব্য টেস্ট স্কোয়াড
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও শফিউল ইসলাম/আবু হায়দার রনি।